, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


৫ মাসের এমপি হতে ঢাকা-১৭ আসনে চলচ্চিত্র তারকা ক্রিকেটারসহ ১২ জনেরও বেশি প্রার্থী

  • আপলোড সময় : ০২-০৬-২০২৩ ১০:৪৫:২০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০২-০৬-২০২৩ ১০:৪৫:২০ পূর্বাহ্ন
৫ মাসের এমপি হতে ঢাকা-১৭ আসনে চলচ্চিত্র তারকা ক্রিকেটারসহ ১২ জনেরও বেশি প্রার্থী
আগামী ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর আগে ১৭ জুলাই হবে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনের ভোট। চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠানের (ফারুক) মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনে নির্বাচিত সংসদ-সদস্য সময় পাচ্ছেন মাত্র পাঁচ মাস। আর সংসদে বসার সুযোগ পাবেন আরও কম। এত কম সময়ের জন্য হলেও ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে সংসদ-সদস্য হতে প্রার্থীর ছড়াছড়ি। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, এমনকি বিনোদনজগতের এক ডজনের বেশি প্রার্থী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তদবিরে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের বাসা ও অফিসে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানা কৌশলে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন।

এদিকে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত জাতীয় সংসদের ১৯০ ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে আগ্রহী প্রার্থীদের কাছে শনিবার থেকে মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি শুরু করবে আওয়ামী লীগ। চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মনোনয়নপ্রত্যাশীরা অতিরিক্ত লোকসমাগম ছাড়া প্রার্থী নিজে অথবা তার একজন যোগ্য প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। আবেদনপত্র সংগ্রহের সময় অবশ্যই প্রার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সঙ্গে আনতে হবে।

ঢাকা-১৭ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসাবে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহর নাম শোনা গেলেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। এছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দুই সহসভাপতি আব্দুল কাদের খান ও মো. ওয়াকিল উদ্দিনের নাম আলোচনায় রয়েছে। তারা দুজনই গুলশান থানা আওয়ামী লীগ ও মহানগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন গুলশান ও বনানী এলাকার থানা পর্যায়ের একাধিক নেতা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, আওয়ামী লীগে যোগ্য ও ত্যাগী নেতার অভাব নেই। এতদিন আমি দল বা সরকারের বাইরে থেকে আদর্শিক লড়াইটা করেছি। এর আগেও অফার করা হয়েছিল; কিন্তু আমার আগ্রহ কম ছিল। এবার যেহেতু আমাকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেওয়া হয়েছে, ফলে দল ও নেত্রী সিদ্ধান্ত নিলে আমি সেটাকে অবশ্যই রেসপেক্ট করব। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফর্ম কিনবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি গুলশানের বাসিন্দা। ফলে দল চাইলে আমি মনোনয়ন ফর্ম কিনব।

একই বিষয়ে আব্দুল কাদের খান বলেন, পঁচাত্তরের পর থেকে বনানী এলাকায় আছি। এই এলাকার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক চর্চা শুরু করেছি। বনানীতে বঙ্গবন্ধু পরিবার ও স্বজনদের সমাধি আমিই প্রথম সামরিক সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যা করি। জেল-জুলুম, অত্যাচার সহ্য করেই রাজনীতি করেছি। আমার নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমি ইতঃপূর্বে তেমন কিছু চাইনি। জীবনের এই বেলায় এসে ঢাকা-১৭ আসনের মনোনয়ন চাইব। তিনি জানান, আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। পরে নেত্রী প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলে তিনি তা প্রত্যাহার করেন।

এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াকিল উদ্দিন বলেন, দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে আমি ঢাকা-১৭ আসনে নির্বাচন করতে চাই। এই আসনের নেতাকর্মী ও মানুষের সঙ্গে আমার যোগাযোগ ভালো এবং সুন্দর সম্পর্ক রয়েছে। আমি এখানে নির্বাচনে সমন্বয়ক হিসাবেও কাজ করেছি। শুধু আওয়ামী লীগই নয়, সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গেও আমার সুন্দর সম্পর্ক রয়েছে। আমি সব সময় তাদের পাশে থাকি। এই এলাকার সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে আমার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। আমি আশা করি, নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা) ও দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাইরে ব্যবসায়ী অঙ্গনের বেশ কয়েকজন পরিচিত ব্যক্তির নাম নিয়েও নানা মহলে আলোচনা চলছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন এফবিসিসিআই-এর বর্তমান সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। ফাহিম আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলে ও যুবলীগ নেতা। এর বাইরে এই আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য বিএনএফের আবুল কালাম আজাদও আগ্রহী। কেউ কেউ সাবেক সংসদ-সদস্য এইচবিএম ইকবালের কথাও বলছেন। এছাড়া যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশকে প্রার্থী করার বিষয়ে কিছু পোস্টারও চোখে পড়ে বনানী-গুলশান এলাকায়।

এদিকে নায়ক ফারুকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া এই আসনের নির্বাচনে চলচ্চিত্রজগৎ ও নাট্যাঙ্গনের বেশ কয়েকজনের নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। চলচ্চিত্রজগতের তারকারাই এই আসনের পরবর্তী প্রার্থী হিসাবে চলচ্চিত্র জগতের মানুষদের কথা বলেছেন। চিত্রনায়ক ওমর সানী প্রার্থী হিসাবে চান চিত্রনায়ক ফেরদৌসকে। ওমর সানীর মতে, ফেরদৌস দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই আসনে ফেরদৌসকে বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে জনপ্রিয় অভিনেতা আলমগীরকে এমপি হিসাবে চান একসময়ের জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জনা রহমান। এর আগে নাট্যাভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান নিজেকে এই আসনের প্রার্থী হিসাবে আগ্রহের কথা জানান।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, মনোনয়ন দেওয়ার সময় নানাদিক পর্যালোচনা করা হয়। ফলে কে দলীয় মনোনয়ন পাবেন, সেটা নিশ্চিত করে বলার মতো সময় আসেনি। তবে যে কেউ চাইলে মনোনয়ন পেয়ে যাবেন, এমনটা ভাবার সুযোগ নেই। বিএনপি ভোটে অংশ না নিলেও কোনো একজন মোটামুটি পরিচিত স্বতন্ত্র দাঁড়িয়ে গেলে সরকারবিরোধী ভোট তার বাক্সে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে যোগ্য ও বিজয়ী হতে সক্ষম এমন ব্যক্তিকেই দলীয় মনোনয়ন দিতে হবে। এদিকে তৃণমূল নেতাদের ভাষ্য-এক অজ্ঞাত কারণে এখানে হুটহাট একজন মনোনয়ন পেয়ে যান। এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। এবার দলের নেতা বা মাঠের রাজনীতিবিদকে এমপি হিসাবে দেখতে চান তারা।

এদিকে ঢাকা-১৭ আসনটি গুলশান, বনানী, ভাষানটেক থানা ও সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত। এই আসনের এমপি নায়ক ফারুক ১৫ মে মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার এ আসনের উপনির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেন ইসি সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৫ জুন, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৮ জুন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন এবং ভোট ১৭ জুলাই। ব্যালটের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে।
দেশে ফিরে নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস

দেশে ফিরে নিজের স্বপ্নের কথা জানালেন বিশ্বজয়ী হাফেজ আনাস